View Single Post
  #2  
Old September 5, 2010, 12:29 PM
ahnaf's Avatar
ahnaf ahnaf is offline
Moderator
 
Join Date: May 31, 2010
Location: Dhaka,BD
Favorite Player: Tamim,Ash,Mash,Shakib
Posts: 5,153

নিজেদের পছন্দের
কথা বলেছেন জাতীয় দলের
ক্রিকেটাররা। মাশরাফি,
আশরাফুল, সাকিবরা নিজেরাই
এবার পাঠকদের শোনাচ্ছেন
তাঁদের প্রিয় ক্রিকেটারের
গল্প।
‘ছোটবেলার সেই ভালোবাসা’
মোহাম্মদ আশরাফুল
প্রিয় : শচীন টেন্ডুলকার
যেভাবে প্রিয়: শচীন
টেন্ডুলকার আমাদের
প্রজন্মের কাছে কেন প্রিয়,
সেটা বোধহয় ব্যাখ্যা করার
দরকার নেই।
আমরা টেন্ডুলকারের
খেলা দেখে বড় হয়েছি,
এখনো তার খেলা দেখে শিখছি।
একটা লোক বিশ বছর
ধরে দুনিয়া শাসন করছে, এরপর
আর কী লাগে! তবে আমার শচীন-
ভক্ত হওয়ার একটা কারণ
বোধহয় ওর সাইজ! আমার মতোই
ছোটখাটো তো! হা হা হা...
প্রথম দেখা: ১৯৯৮ সালে।
ঢাকায় মিনি বিশ্বকাপ
খেলতে এসেছিল। আমি তখন
বলবয়। আমার
কাছে টেন্ডুলকার তখন
ভিনগ্রহের মানুষ। ওর
কাছে গিয়ে দাঁড়াতে পেরেছি,
ছবি তুলতে পেরেছি; এই
স্মৃতি সারা জীবন
সঙ্গে থাকবে।
এখন যেমন: আমি জাতীয় দলের
হয়ে খেলা শুরু করার পর
টেন্ডুলকারের সঙ্গে দারুণ
একটা সম্পর্ক হয়ে গেছে।
২০০৫ সাল থেকে আমাদের
মধ্যে ভালো একটা সম্পর্ক
হয়ে গেছে বলা যায়। সর্বশেষ
বাংলাদেশ সফরে এসে আমার
বাসায়ও এসেছিল। ও কেন যেন
আমার ব্যাটিংটা খুব পছন্দ
করে। ব্যাটিং নিয়ে প্রচুর
কথা তো বলেই। সব সময়
লোকটা পজিটিভ। নেতিবাচক
কোনো কথা ওর মুখে শোনা যায়
না।
‘প্রিয় ক্রিকেটার, প্রিয়
বন্ধু’
মাশরাফি বিন মুর্তজা
প্রিয় : যুবরাজ সিং
যেভাবে প্রিয়: শুধু
ব্যাটিংয়ের
কথা বললে হয়তো অন্য
কাউকে বেছে নেব, বোলিংয়ের
বিবেচনায় হয়তো আর কারও
কথা বলা। কিন্তু ক্রিকেটার
হিসেবে, মানুষ হিসেবে যখন
থেকে যুবরাজকে দেখছি, ওকেই
পছন্দ আমার। অভিষেকের সময়
থেকেই ওকে অসাধারণ লাগে।
তবে বেশি ভালো লাগা শুরু
হয়েছে ওর
সঙ্গে একটা সম্পর্ক
তৈরি হয়ে যাওয়ার পর।
প্রথম দেখা: ২০০৭ সালে,
বেঙ্গালুরুতে। আমি আর
যুবরাজ, দুজনই
এশিয়া একাদশের
হয়ে খেলছিলাম
আফ্রিকা একাদশের বিপক্ষে।
সেই প্রথম
সামনাসামনি পরিচয়।
দেখা গেল, আমি ওকে যেমন
পছন্দ করি, যুবরাজও
আমাকে আগে থেকেই বেশ পছন্দ
করে। দুজনের
একটা বন্ধুত্বই শুরু
হয়ে গেল তখন থেকে।
এখন যেমন: এখন
তো আন্তর্জাতিক
ক্রিকেটে আমার
যারা ভালো বন্ধু, ও তাদের
ভেতরে একজন।
ফোনে কথাবার্তা হয়। এই
সেদিন ওর ডেঙ্গু হলেও
কথা হয়েছে। ও ফোন করে, আমিও
করি। আমাকে ওর আইপিএল
দলে নেওয়ার অনেক
চেষ্টা করেছিল। শেষ
পর্যন্ত
নিলামে সেটা না হওয়ায়
দুজনই কষ্ট পেয়েছি।
‘তার সবই বিস্ময়কর’
আফতাব আহমেদ
প্রিয় : শচীন টেন্ডুলকার
যেভাবে প্রিয়: অনেক
আগে থেকেই টেলিভিশনে ওর
খেলা দেখে ভালো লাগত। ঠিক
কবে, কীভাবে শচীনের ভক্ত
হয়ে গেলাম, মনে নেই।
তবে সম্ভবত ১৯৯৯
বিশ্বকাপে ওর
খেলা দেখে বেশি ভক্ত
হয়ে গিয়েছিলাম। সেই
যে বাবা মারা গেল, দেশে গেল,
ফিরেই সেঞ্চুরি করল!
বিস্ময়কর না! আসলে শচীন
যা করে, সবই তো বিস্ময়কর।
প্রথম দেখা: ২০০৭ সালে যখন
বাংলাদেশে এল, তখন প্রথম
দেখা হয়েছিল। ওর হোটেল
রুমে গিয়েছিলাম। মূলত ওর
ধারাবাহিকতা আর এত দিন
ফর্ম ধরে রাখার রহস্য
নিয়ে কথা বলেছিলাম। কিছু
ব্যাটিং টিপসও দিয়েছিল।
এখন যেমন: সর্বশেষ ঢাকায়
এসে আমাদের
ড্রেসিং রুমে এসেছিল।
ওখানে সবার উদ্দেশেই কিছু
কথা বলেছিল। ওর সঙ্গে আমার
খেলার বাইরে তেমন যোগাযোগ
নেই। তবে এরপর
যদি কখনো কাছাকাছি পাই,
ব্যাটিং নিয়ে আরও কিছু
কথা বলার ইচ্ছে আছে। কিছু
প্রশ্ন আছে।
‘অনুপ্রেরণার আরেক নাম’
রকিবুল হাসান
প্রিয় : শচীন টেন্ডুলকার
যেভাবে প্রিয়: টেন্ডুলকার
কবে, কীভাবে আমার প্রিয়
ব্যাটসম্যানে পরিণত হলেন,
এটা বলতে পারব না।
তবে এটুকু বলতে পারি,
টেলিভিশনে খেলা দেখার শুরু
থেকে একজন ব্যাটসম্যানই
আমাকে সব সময় টেনেছেন, শচীন
টেন্ডুলকার। আমাদের
প্রজন্মের অনেক
ব্যাটসম্যানের
ক্রিকেটে আসার অনুপ্রেরণাই
হলেন টেন্ডুলকার।
প্রথম দেখা: সর্বশেষ টেস্ট
সিরিজে। ওই প্রথম তাঁকে কাছ
থেকে দেখলাম, তাঁর
বিপক্ষে খেললাম।
মাঠে তো তাঁকে প্রতিপক্ষ
খেলোয়াড় হিসেবেই দেখেছি।
কিন্তু একটা আবেগও কাজ
করছিল।
চট্টগ্রামে খেলা শেষে তিনি আমাদের
সঙ্গে ব্যাটিং নিয়ে কথা বলেছিলেন।
একটা কথা খুব মনে পড়ে, ‘সব
সময় নিজের খেলাটা খেলবে।
পরিস্থিতি যা-ই হোক, নিজের
খেলা ভুললে চলবে না।’
ইচ্ছে আছে: এরপর সুযোগ
পেলে তাঁর সঙ্গে অনেক সময়
নিয়ে আলোচনা করার
ইচ্ছে আছে। শুধু
ব্যাটিং নয়, তাঁর
লাইফস্টাইল,
যেভাবে নিজেকে ধরে রেখেছেন
—এসব নিয়েও কথা বলতে চাই।
‘স্বপ্নের ক্রিকেটার’
অলক কাপালি
প্রিয় : শচীন টেন্ডুলকার
যেভাবে প্রিয়: ১৯৯৬
বিশ্বকাপেই সম্ভবত
টেন্ডুলকারকে ভালোভাবে দেখেছি।
এর আগেও ভালো লাগত। কিন্তু
ওই বিশ্বকাপেই তাঁর ভক্ত
হয়ে গেলাম। কেনিয়ার
বিপক্ষে সেঞ্চুরির পর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও
অস্ট্রেলিয়ার
বিপক্ষে দুটো ফিফটি (৭০ ও
৯০); তারপর আবার শ্রীলঙ্কার
বিপক্ষে সেঞ্চুরি! এর পর
থেকে টেস্ট হোক আর ওয়ানডে,
শচীন মানেই রান আর রান।
অবিশ্বাস্যভাবে এখনো সেই
আগের মতো রান করে যাচ্ছেন।
ওঁর ভক্ত না হয়ে উপায় আছে?
প্রথম দেখা: এশিয়া একাদশের
হয়ে সুনামিদুর্গত মানুষের
জন্য ম্যাচ
খেলতে গিয়েছিলাম
মেলবোর্নে। ওখানেই প্রথম
কাছ থেকে দেখলাম।
এখনো স্বপ্নের মতো মনে হয়।
আমি আর শচীন
পাশাপাশি বসে আছি! প্রথম
তো কথাই বলতে পারিনি।
পরে টুকটাক কথা হয়েছে। শচীন
মানুষটা অন্য রকম।
সেধে সেধেই আমার
ব্যাটিং নিয়ে অনেক
কথা বলেছিলেন।
ইচ্ছে করে: পরে আমি ভারতের
বিপক্ষে যখনই খেলেছি,
তিনি দলে ছিলেন না! আমার
কপালটা খারাপ। এরপর তো অনেক
দিন জাতীয় দলে খেলাই হয়নি।
আবার সুযোগ পেলে ওঁর
সঙ্গে অনেক অনেক কথা বলার
ইচ্ছে আছে। আমরা সাধারণ
ব্যাটসম্যানরা দুদিন
না যেতেই বুড়ো হয়ে যাই।
ব্যাট হাতে শচীন
কীভাবে এখনো এতটা তরুণ,
এটা জানতে চাই।
‘মেজাজি এক ব্যাটসম্যান’
তামিম ইকবাল
প্রিয় : যুবরাজ সিং
যেভাবে প্রিয়: কেনিয়ায়
আইসিসি ট্রফিতে ওর অভিষেক
দেখেই ভক্ত হয়ে গিয়েছিলাম।
অস্ট্রেলিয়ার
বিপক্ষে কোয়ার্টার
ফাইনালে প্রথমবারের
মতো ব্যাট করতে নেমেছিল। ৮০
বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলল।
কী ইনিংস! অমন আক্রমণাত্মক
আর মেজাজি ব্যাটিং খুব
দেখিনি। তার ভক্ত
না হয়ে পারা যায়?
প্রথম দেখা: পোর্ট অব
স্পেনে। ২০০৭ বিশ্বকাপের
ম্যাচে। প্রথম দেখাতেই
ওকে হারিয়েছি। ও ৪৭ রান
করেছিল, আমি ৫১। সবচেয়ে বড়
কথা যুবরাজদের
ভারতকে বিশ্বকাপ
থেকে বিদায়ই করে দিয়েছিলাম
আমরা। এখনো দেখা হলে কথায়
কথায় ও সেই ম্যাচের
প্রসঙ্গ তোলে।
এখন যেমন: যুবরাজ আমাদের
মাশরাফি ভাইয়ের খুব
ভালো বন্ধু। আমার সঙ্গে অত
ভালো সম্পর্ক না হলেও
নিয়মিত যোগাযোগ আছে।
মাঝে মাঝেই মেসেজ দেয় ফোনে।
মাঝে রান পাচ্ছিলাম না , তখন
লিখেছিল, ‘ক্রিকেট
ইতিহাসের অন্যতম
সেরা প্রতিভা তুমি।
তুমি রানে ফিরবেই।’
মাঝে মাঝে টিপসও দেয়। সেবার
ওদের সঙ্গে যখন দেড় শ রানের
ইনিংস খেলে আউট হয়ে গেলাম,
বলেছিল, ‘আক্রমণাত্মক
খেলা চালিয়ে গেলে আরও বড়
ইনিংস খেলতে পারতে।’
‘অবিশ্বাস্য এক
ব্যাটসম্যান’
জুনায়েদ সিদ্দিক
প্রিয় : অ্যাডাম গিলক্রিস্ট
যেভাবে প্রিয়: একটা লোক সাত
নম্বরে নেমে মহাবিপদ
থেকে দলকে টেনে তুলে আক্রমণাত্মক
ব্যাটিং করে ম্যাচ
জেতাচ্ছে, দিনের পর দিন এই
দৃশ্য দেখলে কার না ভক্ত
হতে ইচ্ছে করে! টেস্টে সাত
নম্বরে খেলতে নেমে ডাবল
সেঞ্চুরি করেছে,
সেঞ্চুরি তো নিয়মিতই করত।
আবার সেই লোকই
ওয়ানডেতে ওপেন
করতে গিয়ে বোলারদের
নাস্তানাবুদ করে দিত।
গিলক্রিস্ট তো অবিশ্বাস্য
এক ব্যাটসম্যান।
প্রথম দেখা: এই সেদিন
লর্ডসে আমি যখন
ব্যাটিংয়ে নামছি, তখন ও
আমাদের
ড্রেসিং রুমে এসেছিল।
কী আফসোস যে হচ্ছিল!
কথা বলতে পারলাম না।
ইচ্ছে করে: ছয়-সাত বছর
আগে পাইলট ভাই
অস্ট্রেলিয়া থেকে গিলক্রিস্টের
এক জোড়া ব্যাটিং প্যাড
এনে দিয়েছিল, তাতে ওর সই
আছে। প্যাড জোড়া আমার বাসায়
তোলা আছে। কোনো দিন সুযোগ
পেলে ওকে দেখাব। আর
কথা বলার সুযোগ
পেলে ব্যাটিং নিয়ে আলাপ
করতে চাই।
‘যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম’
শাহাদাত হোসেন
প্রিয় : শোয়েব আখতার
যেভাবে প্রিয়: ওর অভিষেক
তো দেখিনি।
তবে শোয়েবকে দেখে আমি প্রথম
চমকে উঠেছিলাম ভারতের
বিপক্ষে সেই
কলকাতা টেস্টে। পরপর দুই
বলে দ্রাবিড় আর
টেন্ডুলকারকে বোল্ড
করে স্ট্যাম্প ছিটকে দিল!
এরপর শারজায়
কী একটা টুর্নামেন্টে (কোকাকোলা টুর্নামেন্ট-১৯৯৯)
ইংল্যান্ড ও ভারতের
বিপক্ষে একই রকম দুর্দান্ত
পেস। সত্যি কথা হলো, ওর ওই
মারাত্মক
আগ্রাসী বোলিং দেখেই
আমি আরও জোরে বল
করতে চাইতাম। আমার
স্বপ্নের ক্রিকেটার
বলতে পারেন শোয়েবকে।
প্রথম দেখা: ভারতে,
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সময়।
সেবার কথাবার্তা কিছু
হয়নি। পরে বাংলাদেশে যখন
এনসিএল খেলতে এল, তখন
কথাবার্তা হয়েছে।
এমনিতে শোয়েব আখতারকে দূর
থেকে দেখলে কেমন
রাগী মনে হয় না?
আসলে কিন্তু লোকটা ভালো।
খুবই মজা করে। অনেক আন্তরিক
কথাবার্তা বলে।
ইচ্ছে আছে: অনেক
কথাবার্তা হলেও তার
সঙ্গে বোলিং নিয়ে কখনো কথা হয়নি।
এনসিএলে আসলে আমরা দুজন
দুই দলে খেলেছি। তাই এসব
নিয়ে কথা বলার সুযোগ পাইনি।
এরপর সুযোগ
পেলে হয়তো বোলিং নিয়ে কথা বলব।
‘ছোটবেলার নায়ক’
সাকিব আল হাসান
প্রিয় : সাঈদ আনোয়ার
যেভাবে প্রিয়: আসলে ঠিক
প্রিয় ক্রিকেটার
বলতে যা বোঝায়, এখন আমার আর
তেমন কেউ নেই। এখন আমার
কাছে আন্তর্জাতিক সব
ক্রিকেটার প্রতিপক্ষ আর
আমাদের ক্রিকেটাররা সতীর্থ
( হাসি)। তাই প্রিয়
হয়ে ওঠা মুশকিল।
তবে বলতে পারি ছোটবেলার
প্রিয় তারকার কথা।
ছোটবেলায় প্রিয় ছিলেন সাঈদ
আনোয়ার। নিজে খেলতে শুরু
করার আগে পাকিস্তানের
সমর্থক ছিলাম। আর
পাকিস্তানের
সেরা ব্যাটসম্যান তখন
তিনি। এ জন্যই প্রিয়।
তবে শুধু এটুকু বলা ঠিক
হবে না। সাঈদ আনোয়ারের
যে স্টাইল, যেমন
যোগ্যতা তাতে তিনি যে দলেরই
খেলোয়াড় হতেন না কেন,
হয়তো পছন্দ করতাম।
দেখা : হয়নি। সুযোগই হয়নি।
আমরা আন্তর্জাতিক
ক্রিকেটে আসার আগেই
উনি খেলা ছেড়ে দিয়েছেন। এখন
তো ক্রিকেটের
সঙ্গে কোনো সম্পর্কই রাখেন
না। ধর্মজীবন নিয়ে আছেন।
তাই দেখা করার সুযোগ হয়নি।
ইচ্ছে : সাঈদ আনোয়ার এখন
যে জীবন যাপন করেন,
তাঁকে ক্রিকেট নিয়ে কিছু
জিজ্ঞেস করে বিরক্ত
করা হয়তো ঠিক হবে না। আমার
সে আগ্রহও খুব একটা নেই।
হয়তো দেখা হলে মানুষটা কেমন,
তাঁর জীবন-দর্শনটা কী—এসব
জানতে চাইব।
‘আবেগজুড়ে তিনি’
আবদুর রাজ্জাক
প্রিয় : সাঈদ আনোয়ার
যেভাবে প্রিয়: ছোটবেলায়
কিছু না বুঝেই পাকিস্তান
ক্রিকেট দলের সমর্থন
করতাম। সেই দলে দেখতাম,
একজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান
বোলারদের
নিয়ে যা খুশি করছেন।
আমি সেই ব্যাটসম্যানের
ভক্ত হয়ে গেলাম। যত
বুঝতে শিখেছি, তত সাঈদ
আনোয়ারের প্রতি আকর্ষণ
বেড়েছে। আমি যখন বিকেএসপির
ছাত্র, তখন একটা সময়
আনোয়ারের ফিফটির
চেয়ে সেঞ্চুরি বেশি ছিল। ওই
বয়সে এমন পরিসংখ্যান
আমাকে তাঁর অন্ধ সমর্থক
বানিয়ে দিয়েছিল। যুক্তি-
বুদ্ধি বলে ব্রায়ান লারার
মতো ক্রিকেটার হয় না।
কিন্তু আবেগ আনোয়ারের
পক্ষে!
প্রথম দেখা: ২০০৮ সালের
এশিয়া কাপের পর
একটা পুরস্কার
বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসেছিলেন।
লাহোরে আমাদের
ড্রেসিংরুমেও এসেছিলেন।
এখন তো আর ক্রিকেট
নিয়ে কথা বলতে তেমন পছন্দ
করেন না। ধর্মের ব্যাপারেই
কথা বলেন। তার পরও আমাদের
খোঁজখবর নিয়েছিলেন। কথায়
মনে হলো, আমার দু-
একটা ম্যাচও দেখেছেন।
ইচ্ছে করে:
মাঝে মাঝে পত্রিকায় দেখি,
বাংলাদেশে আসেন। বিশ্ব
ইজতেমায় নাকি নিয়মিতই
আসেন। ওনার আসার খবর
পেলে ইচ্ছে হয়,
গিয়ে দেখা করি। তখন
নিজেকে সেই ছোট্ট ভক্তই
মনে হয়। কিন্তু ইচ্ছেপূরণ
হয়ে ওঠেনি।
‘লারা একজনই হয়’
শাহরিয়ার নাফীস
প্রিয় : ব্রায়ান লারা
যেভাবে প্রিয়:
আমি আসলে বুঝতে শেখার পর
থেকেই বাসায় খেলা দেখার
একটা পরিবেশ পেয়েছি। তখন
সময়টা ওয়েস্ট ইন্ডিজের
ছিল। ১৯৯২ বিশ্বকাপেই
সম্ভবত ব্রায়ান
লারাকে প্রথম
ভালো লেগে যায়। এরপর একটু
একটু করে বড় হয়েছি, আর
লারার প্রতি আমার
ভক্তি বেড়েছে। তাঁর
ব্যাটিংয়ের
মধ্যে যে একটা আভিজাত্য
ছিল, সেটা আমি আর কারও
মধ্যে দেখিনি।
প্রথম দেখা: ১৯৯৮
সালে বাংলাদেশে যখন
মিনি বিশ্বকাপ হলো, তখন
প্রথম কাছ থেকে দেখলাম
লারাকে। তখন আমি নিতান্তই
ছোট মানুষ। কাছে গিয়ে তাঁর
সঙ্গে কথা বলার তো প্রশ্নই
আসে না। দূর থেকে,
গ্যালারিতে বসে লারাকে দেখেছি।
পরে যেমন: ২০০৭
বিশ্বকাপে তাঁর সঙ্গে আমার
দেখা হয়েছিল। ওয়েস্ট
ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটায়
আমি দলে ছিলাম না। তবে ওঁর
সঙ্গে টুকটাক কথা হয়েছিল।
এর পরও দেখা হলে ও রকম
ক্রিকেটের বাইরের বিষয়
নিয়ে কথা বলতে চাইব।
তিনি কীভাবে ৪০০ রান
করেছেন, কীভাবে রেকর্ডের
পর রেকর্ড করেছেন; সেসব
রহস্য জানতে চাই না। আচ্ছা,
বলুন তো, উনি রহস্যটা ফাঁস
করে দিলেই কি কারও
পক্ষে লারা হওয়া সম্ভব?
লারা এই দুনিয়ায় একজনই হয়।
‘লারার পক্ষে লড়াই করি’
জহুরুল ইসলাম
প্রিয় : ব্রায়ান লারা
যেভাবে প্রিয়: ১৯৯৬
বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার
বিপক্ষে কোয়ার্টার
ফাইনালে সেঞ্চুরি করেছিলেন।
ওই সেঞ্চুরি দেখেই
আমি তাঁর পাগল-ভক্ত
হয়ে গেছি। এরপর
তো টিভিতে লারার
খেলা দেখলেই মনে হয়েছে,
অন্য রকম সুন্দর কিছু
দেখছি। আমার কাছে লারাই
সেরা। এই নিয়ে সেই
ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত
বন্ধুদের সঙ্গে অনেক তর্ক-
বিতর্ক হয়। আমার বেশির ভাগ
বন্ধু শচীন-ভক্ত।
ফলে লারা-শচীন নিয়ে খুব
ফাইট হয়।
প্রথম দেখা: প্রথম আর শেষ,
এখন পর্যন্ত
লারাকে আমি একবারই দেখেছি—
গত টি -টোয়েন্টি বিশ্বকাপের
সময়। কথাবার্তা কিছু হয়নি।
ইচ্ছে আছে: আমার খুব
ইচ্ছে লারার
সঙ্গে একান্তে কিছু সময়
কাটানোর। তাঁর কাছে অনেক
কিছু জানতে চাই।
সবচেয়ে বেশি জানতে চাই
ছক্কা মেরেই আবার টেস্টের
বিশ্ব রেকর্ড ভাঙার
ব্যাপারটা। তিনি সব সময় বড়
বড় মাইলফলকে যেতেন চার-ছয়
মেরে। এই কাজটা কেন করতেন,
কেন এত ঝুঁকি নিতেন;
সেটা জানতে ইচ্ছে করে। আর
খারাপ
সময়ে নিজেকে কী বলতেন,
সেটা জানার ইচ্ছে আছে।
‘চাপকে জয় করা নায়ক’
মুশফিকুর রহিম
প্রিয় : ব্রায়ান লারা
যেভাবে প্রিয়: ভাইয়ারা সবাই
ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের
সমর্থক। তাই তাঁদের
সঙ্গে বসে ওদের
খেলা দেখতাম। সেই ছোটবেলায়
টিভিতে দেখতাম ব্রায়ান
লারার বিস্ময়কর ব্যাটিং।
মনে হয়, সে সময়ই আমি তাঁর
ভক্ত হয়ে গেছি। তবে বড়
হয়ে লারার খেলার ধরন,
মানসিকতা, স্টাইল দেখেই
মূলত বেশি ভক্ত হয়েছি।
প্রতিপক্ষ অধিনায়কের
ফিল্ডার-
প্লেসমেন্টকে চ্যালেঞ্জ
করে উড়িয়ে দিতেন তিনি।
প্রথম দেখা: ২০০৭
বিশ্বকাপে। দ্বিতীয়
রাউন্ডে আমাদের
বিপক্ষে ম্যাচটাই তাঁর শেষ
ওয়ানডে ছিল। আমি আর রফিক
ভাই তাঁর কাছে সময়
চেয়েছিলাম। উনি হোটেল
রুমে যেতে বলেছিলেন। অনেক
কথা হলো। আমি মূলত ওনার চাপ
নেওয়ার বিস্ময়কর
ক্ষমতাটা নিয়ে জানতে চেয়েছিলাম।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে তো দিনের
পর দিন একাই
ভরসা হয়ে খেলতে হয়েছে তাঁকে।
এটা কীভাবে করেছেন,
জানতে চেয়েছিলাম। আরও কিছু
ব্যাটিং টিপস দিয়েছিলেন।
ভারতের বিপক্ষে ওই
বিশ্বকাপে আমার
ইনিংসটা দেখেছিলেন।
সেটা নিয়ে কথা বলেছিলেন।
ইচ্ছে আছে: আবার
যদি দেখা হয়, ওনার কাছে বড়
ইনিংস খেলার কৌশল
নিয়ে হয়তো কিছু জানতে চাইব।
‘ওয়াসিম-যুগের দর্শক আমি’
সৈয়দ রাসেল
প্রিয় : ওয়াসিম আকরাম
যেভাবে প্রিয়:
আমরা তো ওয়াসিমের যুগে বড়
হয়ে উঠেছি। বাঁহাতি পেস
বোলিংটাকে উনি এমন
একটা উচ্চতায়
নিয়ে গিয়েছিলেন যে ভক্ত
না হয়ে উপায় নেই।
আমি নিজে বাঁহাতি বলে বেশি পছন্দ
করতাম। একসময় আমাদের
ধারণা ছিল, পেস বোলিং মানেই
জোরে বল করা। সেই
ধারণাটা বদলে দিয়েছিলেন
ওয়াসিম।
প্রথম দেখা: ২০০১ বা ২০০২
সালের ঘটনা। অনূর্ধ্ব-১৯
দলের ক্যাম্প
করতে আমি বিকেএসপিতে।
উনি বাংলাদেশে এসেছিলেন।
বিকেএসপিতে একটা প্র্যাকটিস
ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলেন।
ওখানে আমাদের
নেটে এসেছিলেন তিনি। তখনই
পেসারদের গ্রিপ নিয়ে,
ডেলিভারি নিয়ে কিছু
কথা বলেছিলেন।
ইচ্ছে করে: এরপর
দেখা হয়েছে বার কয়েক। খুব
বেশি কথা হয়নি। ইচ্ছে আছে,
সেভাবে সুযোগ
পেলে বোলিং গ্রিপ আর পেস
ভেরিয়েশন নিয়ে কথা বলার।
‘দূর থেকে দেখা তারকা’
সফিউল ইসলাম
প্রিয় : ওয়াসিম আকরাম
যেভাবে প্রিয়:
আমি নিজে ক্রিকেটার হব,
পেসার হব—এসব কিছু ভাবার
আগেই ওয়াসিমের ভক্ত
হয়ে গেছি।
ছোটবেলা থেকে ওনার বোলিং,
উইকেট পাওয়ার পর উদ্যাপন
দেখতে দারুণ লাগত। তখন
তো আর পরিসংখ্যান-টংখ্যান
বুঝতাম না। শুধু ওনার
খেলা দেখেই ভক্ত
হয়ে গিয়েছিলাম। পরে বড়
হয়েছি, আর ওনার
সম্পর্কে জেনেছি। যখন
জেনেছি, ওনার এত্ত এত্ত
রেকর্ড, তখন আরও ভক্ত
হয়ে গেছি।
প্রথম দেখা: ওয়াসিম আকরামের
সঙ্গে আমার
কখনো মুখোমুখি দেখা হয়নি।
একবার শুধু দূর
থেকে দেখেছি।
বগুড়া স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-
শ্রীলঙ্কা ম্যাচে উনি ধারাভাষ্যকার
হিসেবে গিয়েছিলেন।
আমি গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছিলাম।
হঠাৎ দেখি ড্রেসিংরুমের
সামনে দাঁড়ানো।
ইচ্ছে করে: এখন তো জাতীয়
দলে খেলছি, একদিন হয়তো ওনার
সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে। ওনার
সঙ্গে আমার অনেক কথা বলার
আছে। বোলিং নিয়ে অনেক কিছু
জানতে চাই।
বোলিং বৈচিত্র্য
সম্পর্কে জানতে চাই।
সবচেয়ে বেশি জানতে চাইব
রিভার্স সুইংয়ের ব্যাপারে।
‘ঠান্ডা মাথার নেতা’
মাহমুদউল্লাহ
প্রিয় : মহেন্দ্র সিং ধোনি
যেভাবে প্রিয়: সময়ের
সঙ্গে সঙ্গে আমার অবশ্য
পছন্দ বদলায়। একসময় খুব
প্রিয় ছিলেন স্টিভ ওয়াহ।
এখন পছন্দ আমাদের সাকিব আল
হাসানকে। তবে সব
মিলিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পছন্দ
মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। শুধু
ওর ব্যাটিংয়ের জন্য নয়,
অধিনায়কত্বটাও দুর্দান্ত।
ওর জীবনে নার্ভাসনেস
বলে যেন কিছু নেই।
পরিস্থিতি যা-ই হোক, ও
শান্ত। ওই শান্ত ভঙ্গিতেই
বোলারদের জীবন অতিষ্ঠ
করে দেয়।
প্রথম দেখা:
বাংলাদেশে সর্বশেষ
ত্রিদেশীয় সিরিজের সময়। ওর
কাছ থেকে সময়
নিয়ে রেখেছিলাম। হোটেল
রুমে দেখা করেছিলাম।
ব্যাটিংয়ের নানা দিক
নিয়ে কথা হলো।
মাথা ঠান্ডা রেখে ব্যাটিং করার
কৌশল নিয়ে কথা হয়েছে। ও
নিজে একসময় ৭ নম্বরে ব্যাট
করত। আমাকে অনেক নিচে ব্যাট
করতে হয়। এ ব্যাপারেও বেশ
কথা হয়েছে।
ইচ্ছে আছে: ও খারাপ সময়
কীভাবে পার করে, এটা জানার
খুব ইচ্ছে আছে। ওই
সাক্ষাতে হয়নি, এরপর আবার
দেখা হলে হয়তো এ
বিষয়ে কথা বলব।
‘বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়’
রুবেল হোসেন
প্রিয় : মাশরাফি বিন মুর্তজা
যেভাবে প্রিয়:
টেলিভিশনে যখন
খেলা দেখতাম, কারও পছন্দ
ছিল শচীন টেন্ডুলকার, কারও
পছন্দ ব্রায়ান লারা।
ছোটবেলা থেকেই আমার
একমাত্র পছন্দ মাশরাফি বিন
মুর্তজা। জিম্বাবুয়ের
বিপক্ষে অভিষেকেই ৪ উইকেট
নিলেন। পরের টেস্টের
দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ওভার
দেড়েক (১.৪ ওভার) বল করে দুই
উইকেট নিয়েছিলেন। ওনার এই
দাপট দেখেই আমি বড় পেসার
হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু
করি।
প্রথম দেখা: ২০০৩ বা ২০০৪
সালে। নড়াইলে পেপসি কাপ
বলে একটা টুর্নামেন্ট হতো।
আমাদের
বিপক্ষে ওপেনিং ব্যাটসম্যান
হিসেবে খেলতে নেমেছিলেন
মাশরাফি ভাই। আমার তিন বল
খেলতে পেরেছিলেন। তৃতীয়
বলেই আউট! হা হা হা...
উনি এখনো এই গল্প করেন।
এখন যেমন : কোনো দিন কল্পনাও
করিনি মাশরাফি ভাইয়ের
সঙ্গে এক দলে খেলব, তাও
জাতীয় দলে! সত্যি বলি, আমার
কাছে স্বপ্ন মনে হয়।
বিশ্বাস করতে পারি না,
আমি তাঁর সঙ্গে বোলিং ওপেন
করছি! তবে মাশরাফি ভাই দূর
থেকে দেখা অন্য তারকাদের
মতো না। খুব বন্ধু ধরনের
মানুষ। অধিনায়ক হয়েছেন
বলে নয়, সব সময়ই খুব সমর্থন
দেন। শ্রীলঙ্কার
বিপক্ষে আমি দুই ওভারে ৩২
রান
দিয়ে ফাইনালটা হারিয়েছিলাম।
তখন সবার আগে উনি আমার
হয়ে কথা বলেছেন।
এটা এখনো করেন।
‘পরিপূর্ণ একজন ক্রিকেটার’
ইমরুল কায়েস
প্রিয় : কুমার সাঙ্গাকারা
যেভাবে প্রিয়: ক্যারিয়ারের
দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই ৮৫
রানের একটা ইনিংস খেলেছিল।
সে সময়ই ওর
ব্যাটিংটা পছন্দ হয়েছিল।
এরপর সময় গেছে, আর ওর
ব্যাটিং দেখে মুগ্ধ হয়েছি।
শুধু ব্যাটিং দিয়ে অবশ্য
সাঙ্গাকারাকে বোঝানো যাবে না।
মানুষ হিসেবে দারুণ ভদ্র,
ক্রিকেটজ্ঞানটা অসাধারণ,
কথা বলে খুব ভালো। সব
মিলে একটা প্যাকেজ। শুধু
ব্যাটিংয়ের বিবেচনায় অবশ্য
আমি আরেকজনের খুব ভক্ত—
আমাদের তামিম ইকবাল।
আমি উইকেটের আরেক পাশ থেকে,
কখনো ড্রেসিং রুমে বসে মুগ্ধ
হয়ে তামিমের ব্যাটিং দেখি।
প্রথম দেখা: আমি তখন
একাডেমি দলের
হয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে। রুয়ান
কালপাগে একদিন
সাঙ্গাকারাকে নিয়ে এসেছিল
আমাদের নেটে। অনেকক্ষণ
সবার উদ্দেশে কথা বলল।
বলা চলে, ওর কথা শুনে ওই
দিনই আমি ওর বেশি ভক্ত
হয়ে গেছি।
পরে যেমন: শ্রীলঙ্কার
বিপক্ষে আমাদের চট্টগ্রাম
টেস্ট শেষে আমি ওর
সঙ্গে দেখা করেছিলাম।
ব্যাটিং নিয়ে অনেক টিপস
দিয়েছে। কীভাবে মনোযোগ
ধরে রাখতে হবে,
ধারাবাহিকভাবে রান করা—
নানা বিষয়ে কথা হয়েছে।
আমি সুযোগ পেলেই ওর
কাছে এসব জানার চেষ্টা করি।
__________________
আমার অপার সীমানাতে তোমার চিহ্ন তবু রবে বেঁচে ...
Reply With Quote