View Single Post
  #58  
Old December 13, 2011, 09:59 PM
oronnya oronnya is offline
Cricket Legend
 
Join Date: October 19, 2011
Favorite Player: Shak,TI,Mash,Mushy,Dravid
Posts: 4,138

Quote:
Originally Posted by idrinkh2O
ব্যাটসম্যানদের লড়াইটা নিজের সঙ্গে|
তারিখ: ১৪-১২-২০১১ |মাশরাফি বিন মুর্তজা

দুঃসময়টা আরেকটু দীর্ঘায়িত। ওয়ানডে সিরিজে ব্যর্থতার পর আশা করেছিলাম, টেস্টে অন্য রকম কিছু হতে পারে। কিন্তু টেস্টেও ভালো কিছু হয়নি।

আগেই বলেছিলাম, পাকিস্তান সিরিজটা হবে নিকট-অতীতে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের শক্তির জায়গাগুলোতে ওরা আরও বেশি শক্তিশালী। পাকিস্তানের স্পিন আক্রমণ দুর্দান্ত, পেস আক্রমণ আমাদের চেয়ে অনেক ভালো। ব্যাটসম্যানদের অভিজ্ঞতাও বেশি। এই পাকিস্তানের বিপক্ষে ভালো করতে আমাদের প্রয়োজন ছিল ফর্মের চূড়ায় থাকা, সামর্থ্যের সর্বোচ্চ প্রয়োগ। দুর্ভাগ্য, আমাদের খারাপ সময়টা এল এখনই।

আবারও ব্যাটিংই বেশি ভোগাল। প্রথম দিন সকালে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেললে আসলে ম্যাচে ফেরা কঠিন। সত্যি বলতে উইকেট খুব ভালো ছিল। ভালো বলেও কিছু উইকেট পড়েছে, তবে বেশির ভাগই আমরা বিলিয়ে এসেছি। কোচ-অধিনায়ক ‘মেন্টাল ব্লক’-এর কথা বলেছেন। এই ব্লকটা কিন্তু এসেছে আত্মবিশ্বাসের অভাব থেকে। পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ ভালো, কিন্তু এমন নয় যে এই মানের বোলিং আমরা আগে খেলিনি।

সিরিজের শুরুটা (টি-টোয়েন্টিতে ৮৫) বাজে হয়েছিল বলেই কিনা, আত্মবিশ্বাস অনেক কম মনে হচ্ছে। সবাই যেন নিজের সঙ্গেই যুদ্ধ করছে। তবে সমস্যাটা যেহেতু মানসিক, ঢালাও সমালোচনার ফল আরও খারাপ হতে পারে। সবারই একটু ধৈর্য ধরতে হবে। নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্যের দিকটা আমাদের ব্যাটসম্যানরা জানে। একটু সময় দিতে হবে ওদের।

তামিমের ফর্ম নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। আমরা অনেকেই ভুলে যাচ্ছি, ব্যাট হাতে গত বছর ও কী কী করেছে। এবার হয়তো ততটা ফর্মে নেই, তার পরও চট্টগ্রাম টেস্টের আগে এ বছর টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ছিল তামিমেরই। ও এখনো দেশের সেরা ব্যাটসম্যান। একটা সিরিজ খারাপ গেলেই সব শেষ নয়। টেন্ডুলকার-লারারও কি বাজে সিরিজ যায়নি! তামিমের ব্যাটিংয়ে আমি পার্থক্য কিছু দেখছি না। যেভাবে ব্যাট করে এত রান করেছে, এখনো সেভাবেই করছে। ভাগ্যটা স্রেফ ওর পক্ষে নেই। ওকে নিয়ে মোটেও বেশি কাটাছেঁড়া করা উচিত নয়। ও দলের সম্পদ, সবারই উচিত মানসিকভাবে ওকে চাঙা রাখা। আমি নিশ্চিত, তামিমের দুঃসময় খুব বেশি লম্বা হবে না। একটা বড় ইনিংস খেলতে পারলেই আবার চেনা তামিমকে দেখা যাবে।

প্রসঙ্গক্রমে আরেকটি কথাও এসে যাচ্ছে। সাকিব-তামিম যখন দারুণ ফর্মে ছিল, নিজের কলামেই আমি একবার লিখেছিলাম, এই দুজন ছাড়া দলের আর কারও পারফরম্যান্স কিন্তু ভালো হচ্ছে না। ওদের বাজে সময় এলেই দলের অবস্থাটা বোঝা যাবে। এখন দেখুন, সাকিব তবু মোটামুটি রান পেয়েছে, তামিম একদমই পায়নি। আর তাতেই দলের কী অবস্থা! তামিমের বাজে সময়ে অন্য ব্যাটসম্যানদের উচিত ছিল নিজেদের পারফরম্যান্সের গ্রাফটাকে একটু ওপরে তুলে আনা। সেটা হয়নি।

নাজিম রান পাওয়ায় আমি খুব খুশি। তবে অভিষেকেই ও দলের সেরা পারফরমার হওয়ায় আরেকটা ব্যাপারও কিন্তু আড়ালে পড়ে যাচ্ছে। ওর উচিত ছিল ইনিংসটাকে আরও বড় করা। ফিফটির আগে আর ফিফটির পরের নাজিমকে পুরো আলাদা মনে হয়েছে। ফিফটির আগে অসাধারণ খেলছিল, টেস্টে একজন ব্যাটসম্যানের যেমন খেলা উচিত। অনেক বল ছেড়েছে, খুব ভালো ডিফেন্স দেখিয়েছে। কিন্তু ফিফটি পেয়েই তৃপ্ত হয়ে গেল বলেই কিনা হঠাৎ চার-ছয় মারা শুরু করল। আউটও হলো দৃষ্টিকটু ভাবে।

ইউনুস খান কিন্তু সেঞ্চুরি, এমনকি দেড় শর পরও কোনো ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলতে যায়নি। হ্যাঁ, নাজিম হয়তো অত অভিজ্ঞ নয়। কিন্তু এটা বুঝতে হবে, টেস্ট ক্রিকেটে সব ব্যাটসম্যানই সব দিন ভালো শুরু করতে পারে না। যেদিন যার শুরু ভালো হয়, তাকে বড় ইনিংস খেলতে হবে। ৫০ কে ৮০, ৮০ থেকে দেড় শতে রূপ দিতে হবে। অভিষেকেই সেঞ্চুরি পেতে পারত নাজিম, এই সুযোগ তো আর আসবে না। আশা করি, এসব ও দ্রুত শিখতে পারবে।

চট্টগ্রামে বোলিংটাও খুব বেশি ভালো হয়নি। আসলে উইকেট দারুণ ব্যাটিং উপযোগী ছিল। আর ওদের ব্যাটসম্যানরা সামান্যতম ঝুঁকিও নেয়নি। তবে বোলিং নিয়ে আমি এতটা চিন্তিত নই। আমাদের বোলিং অনেক বেশি ধারাবাহিক, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমাদের বেশির ভাগ ম্যাচই জিতিয়েছে বোলাররা। একটা-দুটো ম্যাচ খারাপ যেতেই পারে।

শাহাদাতের বোলিং নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু আমি যা দেখলাম, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের চেয়ে ওকে অনেক চনমনে মনে হয়েছে। ওই সিরিজে দ্বিতীয় বল থেকেই মনে হচ্ছিল ওর কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু চট্টগ্রামে মনে হয়েছে ও ছন্দ ফিরে পাচ্ছে। উইকেট হয়তো বেশি পায়নি, তবে চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি। তৃতীয় দিন সকালে তো দারুণ বোলিং করল। রবিউল-নাজমুলরাও ভালো বোলার, তার পরও ঢাকায় শাহাদাতকেই খেলানো উচিত।

সব ব্যাটসম্যানই একসঙ্গে রান পাচ্ছে না—এটা খুব কমই দেখা যায়। আমাদের হঠাৎ করেই সেই সময়টা এসেছে। মুশফিককে বলব, মাথা ঠান্ডা রাখতে, ধৈর্য ধরতে। ঢাকায় উইকেট কেমন হবে জানি না, হয়তো চট্টগ্রামের মতো এতটা ব্যাটিং উইকেট হবে না। তবে উইকেট যেমনই হোক, ব্যাটসম্যানদেরও ধৈর্য ধরা চাই।

তাহলেই বোলাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করবে, বাজে বল পাওয়া যাবে। গুল-চিমা-আজমলরা ভালো বোলার, কিন্তু আনপ্লেয়েবল নয়। আমাদের ব্যাটসম্যানদের লড়াইটা নিজেদের সঙ্গেই। আশা করি, ঢাকায় এই লড়াইয়ে জিতবে ব্যাটসম্যানরা।
Always loved this man and will continue to do so. Respect for you Mash . You spoke like a true well-wisher
Reply With Quote