Originally Posted by
rinathq
An Interview of Law
বাংলাদেশের কোচ হওয়ার ব্যাপারটি তাহলে চূড়ান্ত?
স্টুয়ার্ট ল: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বলতে পারে, চুক্তি স্বাক্ষর এখনো বাকি। তবে আমি শ্রীলঙ্কান বোর্ডকে বলে দিয়েছি, যুক্তরাজ্য সফরের পর আর থাকছি না। আমার দিক থেকে চূড়ান্তই।
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের সঙ্গে তো আপনার চুক্তি আগামী নভেম্বর পর্যন্ত। তার আগেই চলে আসছেন কীভাবে?
ল: শ্রীলঙ্কান বোর্ডের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, নভেম্বরের পরও তারা আমাকে রাখবে কি না। কিন্তু বোর্ড নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি। এমন নয় যে আমি ওদের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করে আসছি। তাদের জানিয়েই আমি বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলা শুরু করি। বাংলাদেশের প্রস্তাবটা আমার জন্য সন্তোষজনক। তা ছাড়া আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চাকরির নিরাপত্তা।
বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত চূড়ান্তভাবে কবে নিলেন?
ল: সপ্তাহ দুয়েক ধরেই এ নিয়ে ভাবছি, আলোচনা করছি। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট সিদ্ধান্ত জানাতে না পারার পরই আমি বাংলাদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিই। সময়টা আমার জন্য খুবই রোমাঞ্চকর। এমন একটা জায়গায় যাচ্ছি, যেখানে কাজ করার সুযোগ আছে। তবে শ্রীলঙ্কা ছেড়ে আসাটাও হবে দুঃখজনক। ওখানে আমার অনেক বন্ধু হয়ে গিয়েছিল।
জিম্বাবুয়ে সফরের আগেই কি আসছেন বাংলাদেশে?
ল: হ্যাঁ, তবে তার আগে কিছু কাজ আছে। শ্রীলঙ্কাতে সেসব সেরেই ঢাকা যাব। জিম্বাবুয়ে সফরের আগে যাওয়া নিয়ে কোনো সংশয় নেই, তবে দুই সপ্তাহ নাকি দশ দিন আগে, সেটা এখনই বলতে পারছি না। যাওয়ার আগে পরিবারকেও একটু সময় দিতে হবে।
এই প্রথম কোনো টেস্ট দলের হেড কোচ হচ্ছেন। কেমন লাগছে?
ল: খুবই ভালো লাগছে। এটা আমার জন্য দারুণ একটা সুযোগ। কাউন্টিতে বাংলাদেশের দু-একজন খেলছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ দলে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে। সামনে অনেক খেলা...আশা করি, আমরা একটা দল হিসেবে গড়ে উঠতে পারব। শুরুতে এটাই হবে আমার মূল কাজ। সব মিলিয়ে আমি রোমাঞ্চিত।
বাংলাদেশ দলের কোচ হতে আগ্রহী হলেন কেন?
ল: বাংলাদেশের মানুষ ক্রিকেট ভালোবাসে, ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসে। তবে আমি মনে করি, যেটুকু বাংলাদেশের অর্জন করা উচিত, সেটুকু তারা অর্জন করতে পারছে না। সঠিক রাস্তা দেখাতে পারলে ধীরে ধীরে দলটা ওপরে উঠে আসবে। ওখানে প্রতিভার অভাব নেই। এটাই মূলত আমাকে বাংলাদেশের ব্যাপারে আগ্রহী করেছে।
দলটা বয়সে তরুণ। কাজটা খুব চ্যালেঞ্জিং হবে নিশ্চয়ই?
ল: তারা হয়তো বয়সে তরুণ, তবে দলের অনেকেই অনেক দিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। ওদের অনভিজ্ঞ বলা যাবে না। খেলার প্রতি তাদের আবেগ আছে। তবে আমি মনে করি, সঠিক প্রস্তুতি নেওয়াটা খুব জরুরি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের খোঁজখবর কি রাখতেন এত দিন?
ল: অপ্রিয় হলেও সত্যি, বাংলাদেশ দল এখন খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই। তবে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে ওপরে ওঠার সুযোগ সব সময়ই থাকে। আমি চাইব, প্রত্যেকের সেরা খেলাটা বের করে আনতে। বাংলাদেশের খেলা আমূল বদলে দিতে আসছি না আমি। তবে পরিকল্পনাটা যাতে আরও ভালো হয় এবং মানসিকভাবেও যেন তারা আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হয়, সেটা নিশ্চিত করব।
বাংলাদেশের দু-একজন খেলোয়াড়ের নাম কি বলতে পারেন, যাঁদের খেলা দেখে ভালো লেগেছে?
ল: সম্ভবত তামিম ইকবালই এখন সবচেয়ে নজরকাড়া খেলোয়াড়। টপ-অর্ডারে সে ওয়ানডে এবং টেস্টেও একইভাবে খেলে। আর সাকিব তো বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডারদেরই একজন। তবে আমি নিশ্চিত, দল এবং দলের বাইরে আরও অনেক প্রতিভা আছে, যারা এই দুজনকে সবদিক দিয়েই ছাড়িয়ে যেতে চায়। ম্যাচ জিততে হলে শুধু দলটাই ভালো হলে হয় না, ভালো বিকল্প থাকাও জরুরি।
সাকিব কাউন্টি ক্রিকেটে খেলছেন। তামিম ইকবালও নটিংহ্যামশায়ারে খেলবেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য নিশ্চয়ই ভালো লক্ষণ বলবেন এটাকে...
ল: অবশ্যই ভালো লক্ষণ। এই বয়সেই তারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের মেলে ধরছে, এটা ভালো লক্ষণ। বাংলাদেশ দল গত বছর ইংল্যান্ডে এসে ভালো খেলায় খেলোয়াড়দের অনেকেই দৃষ্টি কেড়েছে। কাউন্টি ক্রিকেটে খেললে সব সময়ই শেখা যায়। যেকোনো ক্রিকেটারের জন্যই এটা একটা স্কুলের মতো। বছরে দুই মাস বা ছয় মাস এখানে এসে খেললে লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই।
বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে আপনার প্রধান লক্ষ্য কী হবে?
ল: দলটাকে র্যাঙ্কিংয়ে আরও ওপরে তোলা। পরিকল্পনাটা এখানে গুরুত্বপূর্ণ, সেটা ঠিকঠাক হলে ফলাফল এমনিতেই ভালো হবে। আমি মূলত সেই চেষ্টাই করব। তার আগে সাপোর্ট স্টাফদের দলে যোগ দিতে হবে, তাদের সঙ্গে বসে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঠিক করব।
শ্রীলঙ্কা দলের সঙ্গে সময়টা কেমন কাটল?
ল: দেড় বছরের মতো ওদের সঙ্গে কাজ করছি। বিশ্বের সেরা কিছু ক্রিকেটারের সঙ্গে কাজ করছি—অসাধারণ অভিজ্ঞতাই বলতে পারেন। বোর্ড, কোচ, সাপোর্ট স্টাফ—সবার সমর্থন পেয়েছি। সব মিলিয়ে ভালো সময় কেটেছে। আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য ওদের ধন্যবাদ জানাই।
http://www.prothom-alo.com/detail/da...27/news/165611